Skip to main content

ফিতরা আদায়ের সঠিক সময়

ফিতরা আদায়ের সঠিক সময়

·
পরম করুণাময় অসীম দয়ালু মহান আল্লাহ’র নামে শুরু করছি। যাবতীয় প্রশংসা জগৎসমূহের প্রতিপালক মহান আল্লাহ’র জন্য। শতসহস্র দয়া ও শান্তি বর্ষিত হোক প্রাণাধিক প্রিয় নাবী মুহাম্মাদুর রাসূলুল্লাহ’র প্রতি। অতঃপর:

ইমাম ইবনু ‘উসাইমীন (রাহিমাহুল্লাহ) বলেছেন, “ফিতরা আদায় করার দুটো সময় রয়েছে। যথা: (১) বৈধ সময়: আর তা হলো ঈদের এক দিন বা দুই দিন আগে, (২) উত্তম সময়: আর তা হলো ঈদের দিন ঈদুল ফিতরের নামাজের পূর্বে।” [ইমাম ইবনু ‘উসাইমীন (রাহিমাহুল্লাহ), মাজমূ‘উ ফাতাওয়া ওয়া রাসাইল; খণ্ড: ১৮; পৃষ্ঠা: ২৬৬; দারুস সুরাইয়্যা, রিয়াদ কর্তৃক প্রকাশিত; সন: ১৪২৩ হি./২০০৩ খ্রি. (১ম প্রকাশ)]

সুতরাং বুঝা গেল যে, ফিতরা আদায় করার দুটো সময় আছে। আমরা এ ব্যাপারে সুন্নাহ থেকে দলিল বর্ণনা করছি।

·
১. বৈধ সময়: ঈদের একদিন বা দুইদিন আগে ফিতরা আদায় করা জায়েজ। ইবনু ‘উমার (রাদ্বিয়াল্লাহু ‘আনহুমা) থেকে (তাঁর আমল) বর্ণিত হয়েছে,

أنَّهُمْ كَانُوا يُعطُونَ قَبلَ الفِطرِ بِيَومٍ أوْ يَومَينِ.

“তিনি ফিতরার দ্রব্য গ্রহীতাদেরকে ফিতরা দিতেন, ঈদের এক দিন বা দুই দিন পূর্বেই।” [সাহীহ বুখারী, হা/১৫১১]

·
২. উত্তম সময়: ঈদের দিন সকালে ঈদের নামাজের পূর্বে ফিতরা আদায় করা উত্তম। ইবনু ‘উমার (রাদ্বিয়াল্লাহু ‘আনহুমা) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন,

أنَّ رَسُولَ اللهِ ﷺ أمَرَ بِزَكَاةِ الفِطْرِ أنْ تُؤَدَّى قَبلَ خُرُوجِ النَّاسِ إلَى الصَّلَاةِ.

“আল্লাহ’র রাসূল ﷺ লোকজনের ঈদের নামাজে বের হবার পূর্বেই ফিতরা আদায় করার নির্দেশ দিয়েছেন।” [সাহীহ বুখারী, হা/১৫০৩; সাহীহ মুসলিম, হা/৯৮৪]

·
এখন আমরা একটি গুরুত্বপূর্ণ মাসআলাহ নিয়ে আলোচনা করব, ইনশাআল্লাহ। মাসআলাহটি বৈধ সময়ের আগেই তথা ২৮শে রমজানের আগেই ফিতরা আদায় করার বিধান প্রসঙ্গে। আমাদের উল্লিখিত বৈধ সময়ের আগে ফিতরা আদায় করা যাবে কি না তা নিয়ে ‘আলিমগণ তিনটি প্রসিদ্ধ মতে মতানৈক্য করেছেন। যথা:

১. ফিতরা ঈদুল ফিতরের এক দিন বা দুই দিনের চেয়ে বেশি আগে বের করা জায়েজ নয়। এটি মালিকী ও হাম্বালী মাযহাবের মত।

২. নিঃশর্তভাবে সময় হওয়ার আগেই যে কোনো সময় ফিতরা আদায় করা জায়েজ। এটি হানাফী মাযহাবের মত।

৩. নিঃশর্তভাবে রমজান আসার পর যে কোনো সময় ফিতরা আদায় করা জায়েজ। এটি শাফি‘ঈ মাযহাবের মত। [শাইখ মুহাম্মাদ বাযমূল (হাফিযাহুল্লাহ), আত-তারজীহু ফী মাসাইলিস সাওমি ওয়ায যাকাত; পৃষ্ঠা: ১৭১; দারুল হিজরাহ, রিয়াদ কর্তৃক প্রকাশিত; সন: ১৪১৫ হি./১৯৯৫ খ্রি. (১ম প্রকাশ)]

·
এক্ষেত্রে আমরা প্রথমোক্ত মতটিকে প্রাধান্য দিই এবং তা সঠিক বলি। আর আমরা তা বলি বেশ কয়েকটি গ্রহণযোগ্য কারণে। তার মধ্যে কয়েকটি কারণ নিম্নে উল্লেখ করছি।

·
এক. রাসূল ﷺ স্পষ্টভাবে ঈদের দিন সকালে ঈদগাহে যাওয়ার আগে ফিতরা আদায় করার নির্দেশ দিয়েছেন। [সাহীহ বুখারী, হা/১৫০৩] তবে সাহাবীগণের কর্ম ও রাসূল ﷺ এর যুগের আমল থেকে প্রমাণিত হয়েছে যে, ঈদুল ফিতরের এক দিন বা দুই দিন পূর্বে ফিতরা দেওয়ার অনুমতি আছে। যেমন নাফি‘ (রাহিমাহুল্লাহ) বলেন,

كَانَ ابْنُ عُمَرَ يُؤَدِّيهَا قَبْلَ ذَلِكَ بِالْيَوْمِ وَالْيَوْمَيْنِ.

“ইবনু ‘উমার (রাদ্বিয়াল্লাহু ‘আনহুমা) ঈদের এক দিন ও দুই দিন পূর্বেই তা (ফিতরা) আদায় করতেন।” [আবূ দাঊদ, হা/১৬১০; সনদ: সাহীহ]

·
দুই. ফিতরাকে ‘যাকাতুল ফিত্বর’ তথা ‘রোজা ভাঙার যাকাত’ বলা হয়। কেননা রমজানের রোজা ভাঙার কারণে ফিতরা ফরজ হয়। আর রমজানের রোজা ভাঙা বা সমাপ্ত করা হয় মাসের শেষে। সুতরাং মাস শেষ হওয়ার আগে ফিতরা বের করা ফিতরাকে আবশ্যককারী বিষয়ের সাথে সাংঘর্ষিক। তবে সুস্পষ্ট দলিলের ভিত্তিতে ঈদের একদিন বা দুইদিন পূর্বে ফিতরা বের করা জায়েজ সাব্যস্ত হয়েছে। অতএব এর চেয়ে বেশি আগে বের করা যাবে না।

·
তিন. ফিতরা ফরজ হওয়ার হিকমাহ হলো—রোজা অবস্থায় কৃত অনর্থক কথাবার্তা ও অশালীন আচরণ থেকে রোজাদারকে পবিত্র করা এবং মিসকীনদের আহারের সংস্থান করা। তাই রমজানের শুরু বা মাঝের দিকে ফিতরা আদায় করলে তা উক্ত হিকমাহ’র সাথে সঙ্গতিপূর্ণ হয় না। বরং মাসের শেষে আদায় করাই উক্ত হিকমাহ’র সাথে সঙ্গতিপূর্ণ, যেমনটি হাদীসে বর্ণিত হয়েছে।

·
এখন আমরা আমাদের অগ্রাধিকার দেওয়া মতটির স্বপক্ষে আহলুস সুন্নাহ’র ‘আলিমদের কিছু বক্তব্য পেশ করব। ওয়া বিল্লাহিত তাওফীক্ব।

·
১. সৌদি আরবের সাবেক গ্র্যান্ড মুফতী যুগশ্রেষ্ঠ ফাক্বীহ ও মুহাদ্দিস শাইখুল ইসলাম ইমাম ‘আব্দুল ‘আযীয বিন ‘আব্দুল্লাহ বিন বায (রাহিমাহুল্লাহ) [মৃত: ১৪২০ হি./১৯৯৯ খ্রি.] বলেছেন,

والواجب أيضاً إخراجها قبل صلاة العيد، ولا يجوز تأخيرها إلى ما بعد صلاة العيد، ولا مانع من إخراجها قبل العيد بيوم أو يومين. وبذلك يعلم أن أول وقت لإخراجها في أصح أقوال العلماء هو ليلة ثمان وعشرين؛ لأن الشهر يكون تسعًا وعشرين ويكون ثلاثين، وكان أصحاب رسول الله ﷺ يخرجونها قبل العيد بيوم أو يومين.

“ঈদের নামাজের আগে ফিতরা আদায় করা ওয়াজিব। ঈদের নামাজের পর পর্যন্ত দেরি করে ফিতরা আদায় করা জায়েজ নয়। তবে ঈদের এক দিন বা দুই দিন পূর্বে ফিতরা বের করায় কোনো প্রতিবন্ধকতা নেই। এর মাধ্যমে জানা যায়, ‘আলিমদের সবচেয়ে বিশুদ্ধ মতানুসারে ফিতরা বের করার প্রথম সময় হলো ২৮শে রমজানের রাত। কেননা মাস ত্রিশে হয়, আবার ঊনত্রিশেও হয়। রাসূলুল্লাহ ﷺ এর সাহাবীগণ ঈদের এক দিন বা দুই দিন পূর্বে ফিতরা বের করতেন।” [ইমাম ইবনু বায (রাহিমাহুল্লাহ), মাজমূ‘উ ফাতাওয়া ওয়া মাক্বালাতুম মুতানাওয়্যা‘আহ, খণ্ড: ১৪; পৃষ্ঠা: ২০১-২০২; দারুল ক্বাসিম, রিয়াদ কর্তৃক প্রকাশিত; সন: ১৪২০ হিজরী (১ম প্রকাশ)]

·
২. বিগত শতাব্দীর শ্রেষ্ঠ মুফাসসির, মুহাদ্দিস, ফাক্বীহ ও উসূলবিদ আশ-শাইখুল ‘আল্লামাহ ইমাম মুহাম্মাদ বিন সালিহ আল-‘উসাইমীন (রাহিমাহুল্লাহ) [মৃত: ১৪২১ হি./২০০১ খ্রি.] বলেছেন,

ويجوز أن تقدم قبل العيد بيوم أو يومين، ولا يجوز أكثر من ذلك لأنها تسمى زكاة الفطر، فتضاف إلى الفطر، ولو قلنا بجواز إخراجها بدخول الشهر كان اسمُها زكاةَ الصيام.

“ঈদের এক দিন বা দুই দিন পূর্বে ফিতরা আদায় করা জায়েজ। এরচেয়ে বেশি পূর্বে আদায় করা জায়েজ নয়। কেননা এটাকে যাকাতুল ফিত্বর বা রোযা ভাঙার যাকাত বলা হয়, আর তা ফিত্বর তথা রোযা ভাঙার দিকে সম্বন্ধিত করে বলা হয়। আমরা যদি রমজান মাস প্রবেশ করা মাত্র ফিতরা বের করা জায়েজ বলি, তাহলে এর নাম ‘যাকাতুস সিয়াম’ তথা ‘রোজার যাকাত’ (রাখাই সার্থক) হতো।” [ইমাম ইবনু ‘উসাইমীন (রাহিমাহুল্লাহ), মাজমূ‘উ ফাতাওয়া ওয়া রাসাইল; খণ্ড: ১৮; পৃষ্ঠা: ২৭০; দারুস সুরাইয়্যা, রিয়াদ কর্তৃক প্রকাশিত; সন: ১৪২৩ হি./২০০৩ খ্রি. (১ম প্রকাশ)]

·
৩. ইমাম ইবনু ‘উসাইমীন (রাহিমাহুল্লাহ) আরও বলেছেন,

مسألة: لو أخرج زكاة الفطر يوم سبع وعشرين وتم الشهر فهل يجزئ؟ الجواب: لا يجزئ، فهو كمن صلى قبل الوقت ظانًا أن الوقت قد دخل.

“একটি মাসআলাহ: কেউ যদি ২৭শে রমজানে ফিতরা আদায় করে, অথচ মাস সম্পূর্ণ হয়; তবে কি তা তার জন্য যথেষ্ট হবে? এর উত্তর হলো: যথেষ্ট হবে না। সে ওই ব্যক্তির মতো, যে ওয়াক্ত আসার আগেই এটা ভেবে নামাজ পড়ে নেয় যে, ওয়াক্ত বোধহয় এসে গেছে।” [ইমাম ইবনু ‘উসাইমীন (রাহিমাহুল্লাহ), আশ-শারহুল মুমতি‘ ‘আলা যাদিল মুস্তাক্বনি‘; খণ্ড: ৬; পৃষ্ঠা: ১৭০; দারু ইবনিল জাওযী, দাম্মাম ছাপা; সন: ১৪২৪ হিজরী (১ম প্রকাশ)]

·
৪. সৌদি ফাতাওয়া বোর্ড এবং সৌদি আরবের সর্বোচ্চ ‘উলামা পরিষদের প্রবীণ সদস্য যুগশ্রেষ্ঠ ফাক্বীহ আশ-শাইখুল ‘আল্লামাহ ইমাম সালিহ বিন ফাওযান আল-ফাওযান (হাফিযাহুল্লাহ) [জন্ম: ১৩৫৪ হি./১৯৩৫ খ্রি.] বলেছেন,

أما لو أخرجها قبل اليومين من آخر الشهر؛ فإنها لا تجزئه؛ لأنه لم يأت وقت الوجوب؛ ولأن هذا لم يعرف عن السلف أنهم كانوا يخرجونها قبل اليومين من آخر الشهر.

“পক্ষান্তরে সে যদি মাস শেষ হওয়ার (অর্থাৎ, ঈদের) দুই দিন পূর্বে ফিতরা বের করে, তবে তা যথেষ্ট হবে না। কেননা এখনও (ফিতরা) ওয়াজিব হওয়ার সময় উপস্থিত হয়নি। আর যেহেতু সালাফদের থেকে এটা জানা যায় না যে, তাঁরা মাসের শেষদিক থেকে (অর্থাৎ, ঈদের নামায থেকে) দুই দিনের আগে ফিতরা বের করতেন।” [ইমাম সালিহ আল-ফাওযান (হাফিযাহুল্লাহ), শারহু যাদিল মুস্তাক্বনি‘; খণ্ড: ২; পৃষ্ঠা: ২৯৯; দারুল ‘আসিমাহ, রিয়াদ কর্তৃক প্রকাশিত; সন: ১৪২৪ হি./২০০৪ খ্রি. (১ম প্রকাশ)]

·
৫. মিশরের প্রখ্যাত মুহাদ্দিস ও ফাক্বীহ আশ-শাইখুল ‘আল্লামাহ ড. মুহাম্মাদ বিন সা‘ঈদ রাসলান (হাফিযাহুল্লাহ) [জন্ম: ১৯৫৫ খ্রি.] বলেছেন,

وقال الجواز –كما مر لإخراج زكاة الفطر– قبل العيد بيوم أو يومين، لا بأسبوع أو أسبوعين. والأحناف يرون أنه يجوز أن تخرج زكاة الفطر من أول رمضان، فكيف تكون طعمةً للمساكين في يوم العيد، وكيف تكون إغناءً؟!

“ফিতরা আদায়ের জায়েজ সময় ঈদের এক দিন বা দুই দিন পূর্বে, এক সপ্তাহ বা দুই সপ্তাহ পূর্বে নয়। হানাফীরা এ মত পোষণ করে যে, রমজানের প্রথম দিন থেকেই ফিতরা আদায় করা জায়েজ। তাহলে কীভাবে তা ঈদের দিন মিসকীনদের খাদ্যস্বরূপ হয়? আর কীভাবে তা (ঈদের দিন) অভাবমুক্তকারী হয়?!” [‘আল্লামাহ মুহাম্মাদ রাসলান (হাফিযাহুল্লাহ), ফাদ্বলুল ‘আশরিল আওয়াখিরি ওয়া লাইলাতিল ক্বাদর ওয়া আহকামু যাকাতিল ফিত্বর; পৃষ্ঠা: ৬২; শাইখের ওয়েবসাইট থেকে সংগৃহীত সফট কপি]

·
৬. মক্কাস্থ উম্মুল কুরা বিশ্ববিদ্যালয়ের অনুষদ সদস্য আশ-শাইখ, আল-‘আল্লামাহ, আল-ফাক্বীহ ড. মুহাম্মাদ বিন ‘উমার সালিম বাযমূল (হাফিযাহুল্লাহ) বলেছেন,

والذي يترجح عندي والعلم عند الله: إنه لا يجوز إخراج زكاة الفطر بأكثر من يوم أو يومين من صلاة العيد، وهو مذهب المالكية والحنابلة.

“আমার কাছে যে মতটি অগ্রগণ্য—আর প্রকৃত ‘ইলম তো আল্লাহ’র কাছে—তা হলো, ঈদের নামাজের এক দিন বা দুই দিনের চেয়ে বেশি পূর্বে ফিতরা আদায় করা জায়েজ নয়। আর এটাই মালিকী এবং হাম্বালীদের মাযহাব।” [শাইখ মুহাম্মাদ বাযমূল (হাফিযাহুল্লাহ), আত তারজীহু ফী মাসাইলিস সাওমি ওয়ায যাকাত; পৃষ্ঠা: ১৭১; দারুল হিজরাহ, রিয়াদ কর্তৃক প্রকাশিত; সন: ১৪১৫ হি./১৯৯৫ খ্রি. (১ম প্রকাশ)]

·
উপরিউক্ত আলোচনা থেকে স্পষ্টরূপে প্রতীয়মান হলো যে, ঈদের এক দিন বা দুই দিন আগে ফিতরা দেওয়া জায়েজ আছে, তবে ঈদের দুই দিনের চেয়ে বেশি আগে ফিতরা আদায় করা জায়েজ নয়। আর আল্লাহই সর্বাধিক অবগত। আল্লাহ আমাদেরকে সঠিক বিষয় জানার এবং তা মানার তাওফীক্ব দান করুন। আমীন, ইয়া রাব্বাল ‘আলামীন।

·
অনুবাদক: মুহাম্মাদ ‘আব্দুল্লাহ মৃধা
www.facebook.com/SunniSalafiAthari

Comments

Popular posts from this blog

ফিতরা কি যাকাতের মতো ৮ খাতে বণ্টিত হবে?

ফিতরা কি যাকাতের মতো ৮ খাতে বণ্টিত হবে? · পরম করুণাময় অসীম দয়ালু মহান আল্লাহ’র নামে শুরু করছি। যাবতীয় প্রশংসা জগৎসমূহের প্রতিপালক মহান আল্লাহ’র জন্য। শতসহস্র দয়া ও শান্তি বর্ষিত হোক প্রাণাধিক প্রিয় নাবী মুহাম্মাদুর রাসূলুল্লাহ’র প্রতি। অতঃপর: ফিতরা পাওয়ার হকদার কারা, বা ফিতরা কয় খাতে বণ্টিত হবে, তা নিয়ে ‘আলিমগণ দুটি প্রসিদ্ধ মতে মতানৈক্য করেছেন। যথা: এক. ফিতরার খাত যাকাতের মতো। অর্থাৎ ফিতরা যাকাতের মতো ৮ খাতে বণ্টিত হবে। এই মতের স্বপক্ষে দলিল হলো সূরাহ তাওবাহ’র ৬০ নং আয়াত, যেখানে বলা হয়েছে সাদাক্বাহ তথা যাকাত ৮ খাতে বণ্টিত হবে। আর ফিতরাও যেহেতু এক ধরনের সাদাক্বাহ বা যাকাত, কিংবা ফিতরা যেহেতু যাকাতের মতো, তাই এটাও যাকাতের মতো ৮ খাতে বণ্টিত হবে। এটাই অধিকাংশ বিদ্বানের অভিমত। এটি হানাফী, শাফি‘ঈ ও হাম্বালী মাযহাবের মত। [কিতাবুল ফিক্বহি ‘আলাল মাযাহিবিল আরবা‘আহ, পৃষ্ঠা: ৩৩৯; আদ-দারুল ‘আলামিয়্যাহ, কায়রো কর্তৃক প্রকাশিত; সন: ১৪৩৫ হি./২০১৪ খ্রি. (১ম প্রকাশ); সাহীহ ফিক্বহুস সুন্নাহ, খণ্ড: ২; পৃষ্ঠা: ৮৫; আল-মাকতাবাতুত তাওফীক্বিয়্যাহ, কায়রো কর্তৃক প্রকাশিত; সনতারিখ বিহীন] দুই. ফিতরা পাওয়

অর্থ দিয়ে ফিতরা আদায়ের ব্যাপারে ইমামগণের বক্তব্য

অর্থ দিয়ে ফিতরা আদায়ের ব্যাপারে ইমামগণের বক্তব্য · পরম করুণাময় অসীম দয়ালু মহান আল্লাহ’র নামে শুরু করছি। যাবতীয় প্রশংসা জগৎসমূহের প্রতিপালক মহান আল্লাহ’র জন্য। শতসহস্র দয়া ও শান্তি বর্ষিত হোক প্রাণাধিক প্রিয় নাবী মুহাম্মাদুর রাসূলুল্লাহ’র প্রতি। অতঃপর: অর্থ বা খাদ্যমূল্য দিয়ে ফিতরা আদায় করার ব্যাপারে ‘আলিমগণ তিনটি প্রসিদ্ধ মতে মতদ্বৈধতা করেছেন। যথা: এক. অর্থ বা খাদ্যমূল্য দিয়ে ফিতরা আদায় করলে তা যথেষ্ট হবে না। এটাই অধিকাংশ বিদ্বানের অভিমত। এটা মালিকী, শাফি‘ঈ এবং হাম্বালী মাযহাবের মত। [ইমাম ইবনু কুদামাহ (রাহিমাহুল্লাহ), আল-মুগনী; খণ্ড: ৪; পৃষ্ঠা: ২৯৫; দারু ‘আলামিল কুতুব, রিয়াদ কর্তৃক প্রকাশিত; সন: ১৪১৮ হি./১৯৯৮ খ্রি. (৩য় প্রকাশ)] দুই. অর্থ বা খাদ্যমূল্য দিয়ে ফিতরা আদায় করলে তা যথেষ্ট হবে এবং খাদ্যদ্রব্যের চেয়ে খাদ্যমূল্য দিয়ে ফিতরা আদায় করাই উত্তম। এটি হানাফী মাযহাবের মত। [ইমাম কাসানী (রাহিমাহুল্লাহ), বাদাই‘উস সানা’ই‘; খণ্ড: ২; পৃষ্ঠা: ৫৪৩; দারুল কুতুবিল ‘ইলমিয়্যাহ, বৈরুত কর্তৃক প্রকাশিত; সন: ১৪২৪ হি./২০০৩ খ্রি. (২য় প্রকাশ)] তিন. প্রয়োজন দেখা দিলে বা কল্যাণকর মনে হলে খাদ্যমূল